জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন ( র্যাব-১৩) রংপুর এর উদ্যোগে গাইবান্ধার বালাসীঘাটে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছিল। এ সময় সেখানে উপস্থিতি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। হঠাৎ মাইকে উপস্থাপক এক ঘোষণা দিলেন। তিনি জানান, এলাকার একজন রিকশাচালক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সামনে কিছু বলতে চান ।
উপস্থাপকের এমন চমকপ্রদ ঘোষণায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবার মাঝে আগ্রহ তৈরি হয়। সবাই রিকশাচালকের বক্তব্যের অপেক্ষা করতে থাকেন । এক সময় মো. আতাউর রহমান নামের ওই রিকশাচালক মাইকের সামনে দাঁড়িয়ে ছোটখাটো এক ভাষণ দেন। তার ভাষণের পর সবাই হাততালিতে ফেটে পড়েন।
রিকশাচালক আতাউর রহমান বলেন,আমি অতি একজন গরীব মানুষ রিকশাচালক। আমার নাম মো. আতাউর রহমান। বাড়ি ফুলছড়ির মদনেরপাড়া গ্রামে। আজকে আমার আনন্দে বুক ভরে যাচ্ছে। কেননা, ফুলছড়ি উপজেলার এই বালাসীঘাটে আমাদের মাননীয় স্বরাষ্টমমন্ত্রী আমাদের মাঝে শীতের কম্বল বিতরণ করতেছেন। এই আমার বুক ফুলে যাচ্ছে।
‘হ্যাঁ, কেননা এ যাবৎ র্যাবেরা রাতে রাতে এই গাড়ি টহল দিয়া নদীত যায় আসে; কিন্তু ওগলে (এসব) আমরা দেখি না। কিন্তু এখন আমরা বাস্তবে দেখতে পারলাম, কারা দেয় (নদীতে টহল)।’
তিনি বলেন, ‘আমি রিকশা চালাই। রোডে-ঘাটে চলাফেরা করি। আগে সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ ছিল; আল্লাহর রহমতে এখন আর নাই। এখন আমি নির্ভয়ে গাড়ি চালাতে পারি।
‘কেননা, আজকে এতগুলো মানুষের সামনে কথা বলতেছি, এটা আমার সাহসে। আজে (আজকে) চল্লিশ বৎসর হয় আমার গাড়ি চালার (চালানোর) বয়েস (বছর)। যাই হোক, আমি র্যাব-১৩-কে সবার পক্ষ থেকে আন্তকথা (আন্তরিকতা) ও ধন্যবাদ জানাই।’
আতাউর রহমানের আগে বক্তব্য রাখেন ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া। তিনি তার বক্তব্যে বালাসীঘাটে টার্নেল নির্মাণের দাবি জানান।
এ প্রসঙ্গে আতাউর রহমান বলেন, ‘ দাবি করব আমরা জনগণ, আর দাবি করল আমাদের ডিপটি স্পিকার। আমি আর কি কব (বলব)। আমি এই বুলিয়া (বলে) সবাইরে ধন্যবাদ জানাইয়া বুক ভরা ভালবাসা নিয়া কথা শেষ করছি।’
রিকশাচালক আতাউর রহমানের বক্তব্যের মাঝে ও শেষে করতালি দেন উপস্থিত সবাই। আতাউরের এমন বক্তব্য শুনে স্বরাষ্টমন্ত্রী মাইকে তার প্রশংসাও করেন। সেই সাথে র্যাবের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে একটি নতুন রিকশা কিনে আতাউরকে উপহার দেয়ার নির্দেশ দেন।